'বাসর ঘর 'শব্দটা নিয়ে আগে আমি আর আমার বান্ধবীরা মজা করতাম।বিয়ের আগেও এ নিয়ে তারা আমাকে বেশ লজ্জা ফেলে দিতো।কিন্তু আজকে বাসর ঘরে বসে এ শব্দটায় লজ্জা লাগছেনা। লাগছে বিরক্তি আর রাগ।ঘড়ির কাঁটা ১টা ছুঁই ছুঁই। প্রায় ১২ঘন্টা যাবত এই ভারী শাড়ী,গহনা পরে আছি।প্রথম প্রথম আমাকে রুমে দিয়ে গেলে বেশ অস্বস্তি লাগে।সাথে চাপা ভয় আর লজ্জা তো আছেই।কিন্তু গত দেড় ঘন্টা যাবত এভাবে বসে থেকে থেকে প্রচুর রাগ লাগছে।আর কিছুক্ষন পর হয়তো রাগের সীমা অতিক্রম করে যাবে।সদ্য বিবাহ করা এক বউকে কোন জাতের বর এমন অপেক্ষা করায় সেটা মাথায় আসছে না আমার।
আমি সারা জাহান।যার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে তার নাম আদনান রহমান আরিশ।মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জব করে।রিসেন্টলি উনার প্রমোশন হয়েছে।পারিবারিক ভাবেই বিয়েটা হয়েছে।দুই পরিবারই খুশি।
আমি ফোনে যখন উনার ছবি দেখেছিলাম, তখন খুব একটা ভালো লাগেনি আমার।কিছুটা হাবাগোবা টাইপের লাগছিলো দেখতে।পরে যে সামনাসামনি ভালো করে দেখবো সে সুযোগটুকুও পায়নি।আমাকে দেখতে আসার দিন আমি তো লজ্জায় চোখ তুলেও তাকাতে পারিনি।তো ভালো করে পরখ করা তো দূরের কথা।তবে আম্মু বলেছিলো,সামনাসামনি দেখতে বলে বেশ সুন্দর তিনি।অথচ আফসোস আমি দেখতেও পারিনি।আজকে বিয়ের দিনেও একই কাজ হয়েছে।চোখ তুলে উনার দিকে তাকাতেও পারিনি।বড়ই রাগ লাগছিলো নিজের উপর তখন।আর এখন রাগ লাগছে উনার উপর।কোথায় আজকে ভালো করে সামনাসামনি দেখবো উনাকে,তা নয় উনি আমাকে অপেক্ষাই করাচ্ছেন।
আমাদের আগে কথাবার্তা তেমন হয়নি।অর্থাৎ আমরা ভালো করে একে অপরের সম্পর্কে জানি নি।দেখতে এসে আমাদের আলাদা করে কথা বলতে দেয়নি।আর ফোনেও হাই হ্যালো ছাড়া খুব একটা কথা হয়নি।আমাকে দেখে যাওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যেই বিয়ের আয়োজন করে ফেলে। আব্বু আম্মুর কাছে শুনেছি উনার চরিত্র বেশ ভালো।আমি যে পরখ করবো,উনার চরিত্র আসলেই কেমন সে সুযোগ পায়নি।
হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজে তাকিয়ে দেখলাম আরিশ রুমে এসেছেন।চেহারাটা এখনো ভালো করে দেখতে পায়নি।
উনি রুমের দরজা আটকানোর সাথে সাথে আমার মধ্যে আবারো চাপা ভয় জেগে উঠলো।অজানা কারনেই হৃৎপিন্ডটা জোরে জোরে ঢোল পিটাচ্ছে।হাত পা প্রচন্ড ঘামতো শুরু করলো।আমি হাত দুটো নিয়ে চুপিসারে বিছানার চাদরে মুছে নিলাম।শাড়ীতে মুছার উপায় নেই।আমি মাথাটাও উঁচু করিনি।এতোক্ষন যে বকবক করলাম,উনাকে দেখবো দেখবো করে।এখন সেই সুযোগ পেয়েও মাথা নিচু করে আছি।
আরিশ এসে আমার সামনে বসলো।এমনিই হার্টটা তা তা থৈ থৈ নাচছিলো এতোক্ষন, আর উনি সামনে এসে বসায় ডিসকো দিওয়ানে নাচছে।উফফ জীবনটাই বেদনার।
উনি ধীরে ধীরে আমার ঘোমটা উঠালেন।আমি তখনও মাথা নিচু করে আছি। উনি হাত দিয়ে আমার থুতনিটা আলতো করে ধরে মাথা উচুঁ করালেন।আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম চোখটা বন্ধ করে ফেলবো।পরে কি ভেবে চোখটা জোর করে খুলে রাখলাম।
এই প্রথম আরিশকে এতোটা কাছ থেকে ভালো করে দেখলাম।উনাকে দেখে নিজেকে বেশ ভাগ্যবতী মনে করলাম।উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ের রং,মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ী।মাথার চুলগুলো ঘন আর গোছালো। চোখ দুটোর দিকে তাকালে একটা মায়ায় আটকিয়ে ফেলা যায় নিজেকে।আর উনার ঠোঁটের মিষ্টি হাসিটা আরো বেশি নজরকাড়া।একবার দেখলে বারবার দেখতে ইচ্ছা হয়।আমি অবাক হয়ে ভাবছি, ছেলে মানুষের হাসিও এতো নজরকাড়া হয়!!!আমার ভাবনার সুতো ছিঁড়ে উনি এবার মুচকি হেসে বললেন,
--"মাশাল্লাহ।এতো সুন্দর লাগছে তোমাকে দেখতে, যে আমার চোখ সরানোই দায় হয়ে পরেছে।"
উনার এমন কথায় আমি পুরো লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠলাম।মনে হচ্ছে এখনই চলে যাই এখান থেকে।কিন্তু না পারছি যেতে না পারছি থাকতে।
উনার মুখে এখনো সে হাসি।উনি কয়েক সেকেন্ড আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললেন,
--"তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও।এতোক্ষন তোমাকে ওয়েট করানোর জন্য সরি।আসলে একটা জুনিয়র ছেলেকে অফিসের কিছু কাজ বুঝাতে গিয়ে দেরি হয়ে গিয়েছে। "
উনার কথা শুনে এতোক্ষন পর আমি মুখ খুললাম।আর বললাম,
--"কোনো সমস্যা নেই।"
আমার কথায় উনি মৃদু হেসে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন।আমিও বিছানা ছেড়ে আস্তে ধীরে উঠতে লাগলাম।কিন্তু এরপর যা হলো তা আমি মোটেও আশা করিনি।বিছানা থেকে উঠতে গিয়ে কিভাবে কিভাবে শাড়ীর কুঁচিতে পা আটকে পরে যেতে নিলাম।পরার আগেই আরিশ আমাকে ধরে ফেললো।আমিও তাড়াহুড়ো করে উনার শেরওয়ানির কলার দুহাত দিয়ে শক্ত করে ধরে ফেললাম।
এমন একটা পরিস্থিতিতে আমি যে কোনোকালে পরবো আশাই করিনি।এইজন্য শাড়ী নামক বস্তুটাকে আমার ভয় লাগে।কখন হুটহাট আমাকে ফেলে দেয় বলা যায় না।আজকে তো আরিশ ছিলো বলে বেঁচে গেলাম।উনি না থাকলে কোমড় ভেঙে বারোটা বাজাতাম আমি।
আরিশ আমাকে ধরার আগেই পরে যাওয়ার ভয়ে আমি চোখ বন্ধ করে ফেলি।আর মাত্র চোখ খুলে দেখলাম উনি আমার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে।মুখে উনার হাসি।এমতাবস্থায় আমি উনার দেখে ক্রাশ খাবো নাকি উনি আমাকে দেখে ক্রাশ খেলো, তা বুঝে উঠতে পারলাম না।অবশ্য ক্রাশ খাওয়া বাদ দিয়ে আমি এমন পরিস্থিতিতে পরে লজ্জায় নিজেকে গুটিয়ে নিতে চাইলাম।তাই আর দেরি না করে আমি উনাকে ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালাম।
আমার সাথে সবসময় এমনটা হয়। যেখানে আমি সামলিয়ে চলতে যাবো,সেখানেই অঘটনটা ঘটিয়ে ফেলি।এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না।আমি তাড়াতাড়ি করে আয়নার সামনে গিয়ে পরনের গহনা খুলতো লাগলাম।গহনা খুলতে খুলতে হঠাৎ আয়না দিয়ে উনার উপর চোখ পরলো।উনি হাসছেন।তাও আবার মিটমিটিয়ে।নিশ্চয় কিছুক্ষন আগে হয়ে যাওয়া ঘটনা মনে করে।উনার এ হাসি দেখে যেমন লজ্জাও লাগছিলো, তেমনি রাগও লাগছিলো।
আরিশ আলমারির কাছে এসে উনার জামাকাপড় নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে গেলেন।ওয়াশরুমের দরজা দেওয়ার আগে তিনি আমাকে বললেন,
--"তোমার হয়তো কিছু সময় লাগবে।তাই আমি তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আসি।"
আমি কিছু না বলে শুধু মাথা নাড়ালাম।যার অর্থ, ঠিক আছে।আমি গহনা খুলে শাড়ীর পিনআপ খুলে ব্যাগের থেকে থ্রিপিস আর তোয়ালে বের করে বসে রইলাম।বাসায় থাকলে আমি শাড়ীটা খুলেই ওয়াশরুমে যেতাম।কিন্তু এখানে তো আর সেটা সম্ভব হচ্ছে না।এখন যদি ওয়াশরুমে গিয়ে ভুলবশত শাড়ীটা ভিজিয়ে ফেলি সেটা আমারই দোষ হবে।তাই অতি সাবধানে সব কাজ করতে হবে।
মিনিট পাঁচেক পর উনি ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলেন।তোয়ালে দিয়ে মুখটা মুছে মাথার চুল মুছতে লাগলেন।উনার এই অতি সাধারন কাজটাকেও কেনো যেনো আমার কাছে অতি অসাধারণ মনে হতো লাগলো।জানি না কেনো।সাদা গেন্জি আর কালো চেকের ট্রাউজারে একদম টিনএজার লাগছে উনাকে দেখে।অথচ বাস্তবে উনি এখন একজন বিবাহিত পুরুষ।
উনি মাথা মুছতে মুছতে আমার দিকে এগিয়ে এসে বললেন,
--"এবার তুমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।আর কিছু হেল্প লাগলে আমাকে বলো।"
আমি উনার কথা শুনে জামাকাপড় নিয়ে বসা থেকে উঠে গেলাম।হেঁটে উনার কাছাকাছি আসতেই খেয়াল করলাম,উনার সামনের চুলগুলো বেয়ে কিছুক্ষন পরপরই বিন্দু বিন্দু পানি পরছে।আমি চিন্তা করলাম মাথা মুছার পরও পানি পরছে কি করে?
হঠাৎ আমার মনের মধ্যে অপূর্ণ হওয়া এক ইচ্ছা জাগলো।আমার সামনে উনাকে বসিয়ে তোয়ালে দিয়ে আলতো হাতে উনার মাথার চুলগুলো মুছে দিতে ইচ্ছা হলো আমার।উনার চোখের সামনে পরা অবাধ্য চুলগুলোকে উল্টিয়ে পাল্টিয়ে আরো অবাধ্য করে দিতে ইচ্ছা হলো।কিন্তু আফসোস এসবের কিছুই করতে পারবো না।
আমি আর দেরি না করে ওয়াশরুমে চলে গেলাম।
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে থ বনে গেলাম।২.২০বাজে।এতো রাত কোন চোখের পলকে হয়ে গেলো টেরই পেলাম না। এর আগে কখনো এতো রাত এভাবো জাগেনি আমি।আর এতো রাতে শাওয়ার নেওয়া তো দূরেই থাক।
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলাম আরিশ রুমে নেই।ভাবলাম হয়তো বারান্দায় আছেন। আমি ভেজা তোয়ালে ছাড়িয়ে দিতে বারান্দায় গেলাম।সেখানে গিয়ে দেখলাম উনি বারান্দায় রাখা চেয়ারে বসে আছেন।তাহলে আমার আন্দাজটা সঠিক হলো।আমার তোয়াল ছাড়িয়ে দিতে দিতেই তিনি মিনতি করে বললেন,
--"এখানে আমার পাশে বসো।কিছু কথাবার্তা বলি।"
উনার কথায় পরে গেলাম এক দোটানায়। সারাদিনের ক্লান্তির জন্য এখন প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে।ওয়াশরুম থেকে বের হয়েই ভেবেছিলাম এখন একটা ঘুম দিবো।কিন্তু উনার এমন আকুতি শুনে এখন মনে হচ্ছে উনার পাশে বসে গল্প করি।একদিকে ঘুম পাচ্ছে আরেকদিকে উনার সাথে রাতভর গল্প করার একটা তীব্র ইচ্ছা জাগছে।শেষপর্যন্ত উনার সাথে গল্প করার ইচ্ছাটাকেই প্রাধান্য দিলাম।আমি তোয়ালে ছাড়িয়ে দিয়ে উনার পাশের চেয়ারটায় বসলাম।এভাবে এতো রাতে একটা ছেলের পাশে গল্প করবো,এটা ভাবতেই কেমন যেনো লাগছে।জানি আরিশ আমার হাসবেন্ড, তারপরও কেমন যেনো আনইজি লাগছে।কারন কখনো এভাবে একা কোনো ছেলের সাথে বসিই নি,গল্প করা তো দূরে থাক।
আমি বুঝতে পারছি উনি আমার দিকে হঠাৎ হঠাৎ তাকাচ্ছেন।এজন্য আরো বেশি আনইজি লাগলো।আমি মাথায় ওড়না দিয়ে আছি।তাই চেষ্টা করলাম মুখটাকে যতোদূর সম্ভব আড়াল করার।কিন্তু আমার এ কাজে উনি সফল হতে দিলেন না।
উনি হাত বাড়িয়ে আমার মাথা থেকে ওড়নাটা সরিয়ে খানিকটা হেসে বললেন,
--"আমার সামনে এতো পর্দা করতে হবে না।আমি তো তোমার হাজবেন্ড।আর হাজবেন্ডের সামনে কোনো পর্দা নয়।"
উনার কথা শুনে আমি মনে মনে বললাম,
--"এটা মোটেও আপনার সাথে পর্দা করার জন্য করছি না। এটা তো করছি আপনার ঐ নজর থেকে বাঁচার জন্য।"
উনার কথার প্রতিউত্তরে আমি কিছু না বলে চুপ হয়ে থাকলাম।
কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর উনি বললেন,
--"কি আজব না....তোমার সাথে বিয়ে হয়ে গিয়েছে অথচ তোমার সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না।"
উনার কথা শুনে আমি মৃদু হেসে বললাম,
--"আসলে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হলে এমনটাই হয়।আর আপনিও কাজে খুব বিজি ছিলেন বিয়ের আগে।"
--"হুম।নতুন নতুন প্রমোশন হয়েছে তো তাই কাজের প্রেশার একটু বেশিই।"
--"বুঝলাম।তো এমন কাজের প্রশার কতোদিন থাকবে??"
উনি আমার প্রশ্নের ধরন শুনে হালকা হেসে বললেন,
--"জানি না ঠিক কতোদিন এমন থাকবে।"
আমি আর কিছু না বলে চুপ হয়ে থাকলাম।আরিশ কিছুক্ষণ পর বললেন,
--"একটা বিষয় জানতে চাই।কমন একটা বিষয়।"
আমি এবার উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
--"জ্বি বলুন।কি বিষয়ে জানতে চান।"
উনি খানিকটা ইতস্তত নিয়েই বললেন,
--"তোমার কি বিয়ের আগে বয়ফ্রেন্ড ছিলো বা কাউকে পছন্দ করতে??"
আমি উনার প্রশ্নে খানিকটা অবাক হলাম।পরে ভাবলাম, আজকালকার যুগে মনে এমন প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক। আর আমার মনেও তো এ নিয়ে উনার কাছে প্রশ্ন আছে।আমি স্বাভাবিক ভাবেই বললাম,
--"উঁহু। আমার কোনো বিএফ ছিলো না। কারন বিয়ের আগে এসব রিলেশন করার ব্যাপারটা আমার মোটেও পছন্দ না।আর কাউকে পছন্দ করার কথা জিজ্ঞাস করলে আমি বলবো আমার ক্ষেত্রে সে লিস্টটা অনেক লম্বা" বলে আমি মৃদু হেসে দিলাম।কিন্তু আমার এ কথাটা যে মোটেও হাসির না তা আরিশের চেহারা দেখে আন্দাজ করা যাচ্ছে। উনি আমার প্রথম কথায় ঠিক যতোটা না খুশি হয়েছেন,দ্বিতীয় কথায় হয়তো তার চেয়ে বেশি ব্যাথিত হয়েছেন। উনার এমন মুখ করে থাকাটা আমার সহ্য হলো না।তাই আমি দেরি না করে বলে ফেললাম,
--"আরে এটা টেনশনের বিষয় না।পছন্দের লিস্ট এ যারা আছে সবাই সেলিব্রেটি ক্রাশ।সেলিব্রেটি ক্রাশ দিয়েই ঐ লিস্ট ভরা।"
আমার এ কথায় উনি যে খুব খুশি হলেন, তা উনার সেই নজরকারা হাসি দেখেই বুঝতে পারলাম।উনি এবার দুই ভ্রু উঁচিয়ে মায়াভরা কণ্ঠে জিজ্ঞাস করলেন,
--"তোমার লিস্টে কি আমার জায়গা হবে??"
আমি উনার এমন প্রশ্নে লজ্জা না পেয়ে পারলাম না।মনে মনে ঠিকই বলছি যে,
--"হ্যাঁ আপনাী জায়গা হবে।আপনি আমার হাজবেন্ড, সো আপনাকে এ লিস্টের সবার উপরে জায়গা দিবো।"
কিন্তু এ কথাটা আর উনার সামনে বলতে পারলাম না।কি করেই বা বলবো।
আরিশ আমার চুপ করে থাকা দেখে আবারো একইভাবে জিজ্ঞাস করলেন,
--"কি হলো বলো।"
উনি মনে হয় আমার কাছ থেকে জবাব না শোনার পর্যন্ত এ টপিকটা ছাড়ছেন না।কিন্তু আমি কিভাবেই বা বলবো এ কথা।
বেশকিছুক্ষন পর আমি হাজারো অস্বস্তি নিয়ে বললাম,
--"হুম আপনার জায়গায় হবে এ লিস্টে।একদম উপরে।"
উনি আমার কথা শুনে কিছুটা জোরে হেসে বললেন,
--"যাক বাবা বাঁচলাম।আমি তো ভেবেছিলাম হাজারো সেলিব্রেটির ভিড়ে এই ক্ষুদ্র মানুষের জায়গা হবে তো।"
উনার কথা শুনে আমি হেসে ফেললাম।কিছুক্ষণ পর আমি জিজ্ঞাস করলাম,
--"আপনার কোনো গার্লফ্রেন্ত ছিলো না বা পছন্দ ছিলো না??"
আমার প্রশ্ন শুনে উনার মুখ থেকে হাসিটা চলে গেলো।উনি একদম নরলাম হয়ে গেলেন।উনার এমন আকস্মিক পরিবর্তন আমার মনে কড়া নাড়তে লাগলো।আর বলতে লাগলো,খারাপ কিছু শুনতে হবে না তো??
চলবে❤
তুলনাহীন_তুমি_প্রিয়
পার্ট_১


0 Comments